ফেসবুককে কে না জানেন।হয়তো ফেস ম্যাশ থেকে ফেসবুক হয়ে উঠার উপাখ্যানটা সবার জানা নেই।সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের এই বিশ্ববৃক্ষের সূতিকাগার কিন্তু হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়।আমেরিকার সেই ক্যাম্পাসে রোপিত অঙ্কুর এখন মহীরূহ।জনপ্রিয়তা বাড়তে বাড়তে এই পর্যায়ে গেছে যে অনেকে তাকে অর্ডারে রাখতে পারছেন না।সৃষ্টি হচ্ছে ডিসঅর্ডার।মস্তিষ্ক থেকে ছড়িয়ে পড়ে সমাজে।
১৯৬৯ সাল।একান্তই যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর কাজে ব্যবহার উপযোগী করে তৈরি করা হয়েছিল একটি যোগাযোগ মাধ্যম।সাটাই বেশ কয়েক কদম এগিয়ে হয়ে উঠল তথ্য সংগ্রহ,উদ্দীপনা দান,যোগাযোগ-সংযোগ ইত্যাদির উপায়।নেটওয়ার্কিং সাইটের গুরুত্ব এখন কাউকে বলে বেঝাতে হয় না।লক্ষ-কোটি মানুষ জুড়ে গেছেন।হবে নাই বা কেন!এটি এমন এক আশ্চর্যজনক জায়গা যেখানে স্ক্রিনে একটি আঙুলের স্পর্শেএক পলকেরও কম সময়ে লক্ষ-কোটি মানুষের কাছে পৌঁছানো যায়।সোশ্যাল মিডিয়া আর যুব সম্প্রদায়ের সম্পর্ক নিবিড়।
কৃতিত্ব অবশ্যই মার্ক জুকারবার্গের।২০০৩ সাল।হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি নিজস্ব আন্তঃযোগাযোগ,পরিচালন ব্যবস্হা গড়ে তোলেন।নাম ‘ফেস ম্যাশ’।যেখানে কিছু ছবি এবং প্রাথমিক তথ্য দেওয়া ছিল।দুটি ছবি দেওয়া থাকতো যেখানে শিক্ষার্থীরা হট বা নট বলে ভোট দিতো।এরজন্য মার্ক জুকারবার্গের হার্ভার্ডের সংরক্ষিত তথ্য কেন্দ্রেও হানা দিয়েছিলেন।ভিজিটররা যথারীতি অনলাইন প্রক্রিয়ায় মাত্র চার ঘন্টার মধ্যে প্রায় ২২ হাজার ভোট দেন।জুকারবার্গের উৎসাহ বেড়ে যায়।ভূমিষ্ট শিশুটি তখন হাঁটতে শুরু করেছে।ফেস ম্যাশ নাম নেয় দ্য ফেসবুক ডট কম।সাইটটি হার্ভার্ডের ডরমেটরিতে উদ্বোধন করেন জুকারবার্গ।খুব শীঘ্রই,বলা ভালো মাত্র ছ’মাসের মধ্যে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১০ লক্ষ।বছর ঘুরতেই নাম পাল্টে হয় ফেসবুক।সেই বছরই ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৫ লক্ষ।
ফৈসবুক ব্যবহারের প্রারম্ভিক পর্যায়টি ছিল মানুষের কাছে অভূতপূর্ব কল্যাণের ক্ষেত্র হিসেবে।কিন্তু এর অতি আকর্ষণমূলক প্রভাবে অচিরেই যুব সম্প্রদায় এসে পড়ল এক হুমকির মুখে।ফেসবুক তাদের দৈনন্দিন জীবনধারাকে ভীষণভাবে প্রভাবিত করে।ফলস্বরূপ তাদের জীবনে আসে উদ্বেগ,কর্মক্ষমতা হ্রাস,বিষন্নতা,নিঃসঙ্গতা এবং মূলত তাদের কেতাবি চর্চায় বিশেষভাবে অন্তরায় সৃষ্টি করে।বিভিন্ন গবেষণাপত্রে দেখা গেছে ফেসবুক বিশেষত যুব সম্প্রদায়ের উপরই বেশি প্রভাব ফেলেছে এবং শিক্ষার্থীরাই মূলত ফেসবুকের প্রধান শিকার।
By-জয়দীপ চক্রবর্তী
10,349 thoughts on “আপনারও নেট-আসক্তি নেই তো?”