দিন কয়েক আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা ভিডিও দেখছিলাম। অনুপ্রেরণা দেয় এমন একটি ভিডিও। একজন বলছেন, ঘরে বসে না থেকে কিছু একটা করুন যাতে হাতে কিছু টাকা আসে। কিছু একটা করুন। আমি নিজে পেনশনার। হাঁটাচলা করতেও অসুবিধা। কি আর করব? কি আর করা যায়? মনের কথাটা নিশ্চয়ই ছেলে বুঝতে পেরেছে। সে বলে উঠলো মিউচ্যুয়াল ফান্ডে টাকা খাটাও। তোমাদের ফিক্সড ডিপোজিটের চেয়ে তিনগুণ বেশি লাভ হবে। এর আগেও বহুবার এই কথা বলেছিল ছেলে। এবার তাহলে দেখতেই হয়।
শেয়ার বাজারে টাকা খাটাতে হলে খুব সাবধানে পা ফেলতে হবে। নতুন হলে অল্প ঝুঁকি নিন। মানে অল্প টাকা খাটান। শেয়ার বাজারে দুটো কথা সবসময় শুনে থাকবেন। নিফটি ও সেনসেক্স। নিফটি হল ন্যাশন্যাল স্টক এক্সচেঞ্জ ও ফিফটি। অর্থাৎ ন্যাশন্যাল স্টক এক্সচেঞ্জে লিপিবদ্ধ ৫০টি স্টক বা সংস্থা।
আর সেনসেক্স হল সেন্সেটিভ ও ইন্ডেক্স। শেষেরটি বা সেনসেক্স যে যথেষ্ট ঝুঁকির তা নামেই বোঝা যায়।
নিফটির সংস্থাগুলোতে লগ্নি করলে ঝুঁকি কম। লাভও কম। তবে দীর্ঘ মেয়াদে রাখা হলে লাভ হবেই হবে। আর চট করে প্রচুর লাভের মুখ দেখতে হলে লগ্নি করুন সেনসেক্সের স্টকগুলোতে। মনে রাখবেন, এই ক্ষেত্রে যেমন অল্প সময়ে প্রচুর টাকা আমদানি হতে পারে তেমন উল্টোটাও হতে পারে। কিসে লাভ, কিসে ক্ষতি তা রাতারাতি বুঝতে পারবেন না। দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় তা অর্জন করতে হয়। আপনি যদি নতুন হন তবে সাহায্য নিতে পারেন দালালদের। অতি অল্প কমিশনের বিনিময়ে এরা আপনাকে মার্কেটের যাবতীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করে যাবে। এই তথ্য আপনাকে অভিজ্ঞতা অর্জনে সাহায্য করবে।
ছেলের বন্ধু রাতুল দেব। বেশ কয়েক বছর ধরে মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করে চলেছে। নিউটাউনে ৫০ লক্ষ টাকার ফ্ল্যাট কিনেছে। সাথে গাড়িও। রাতুল গর্ব করেই বলে যে ফ্ল্যাট কিনেছি আদানির টাকায়। গাড়ির ইএমআইও দিচ্ছে আাদানিই। ওর জায়গায় যেতে হলে আপনাকে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতেই হবে। আর একটা কথা মনে রাখবেন। কখনোই একটা স্টকে সব পুঁজি ঢালবেন না। মদ, জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ এসব সংস্থায় ঝুঁকি বেশ কম।
আরো একটা লগ্নির ভালো সুযোগ রয়েছে। সেটা হল গোল্ড বন্ড কিনে রাখা। প্রায় সবকটা ব্যাঙ্ক বছরে কয়েকবার গোল্ড বন্ড বিক্রি করে থাকে। আপনি এই বন্ডে বিনিয়োগ করলে ব্যাঙ্ক কিন্তু আপনাকে সোনা দেবে না। দেবে একটা সার্টিফিকেট। এতে বলা থাকবে কত গ্রাম সোনা আপনি কিনলেন। যত টাকা বিনিয়োগ করলেন তার উপর খুবই অল্প সূদ দেবে ব্যাঙ্ক। মেয়াদ পূর্তিতে আপনাকে বাজার দরের সমান সোনার দাম ফেরত দেবে। ধরুন ২০১৬ সালে আপনি ১০ গ্রাম সোনার বন্ড কিনলেন। তখন এক গ্রামের দাম ছিল ১৯০০ টাকা। ২০২৪ সালে তা বেড়ে হবে ৫,৫০০ টাকা বা তারও বেশি। তার মানে আট বছরে আড়াই গুন ফেরত পেলেন।
By – শেখর পাল