প্রজাপতি! প্রজাপতি! কোথায় পেলে ভাই এমন রঙিন পাখা?

বিজ্ঞান

শোঁয়াপোকা কার না ঘেন্না লাগে? পোকার শোঁয়াগুলি হাতে বিঁধলে কি অবস্থা হয় যার বিঁধেছে সে-ই বলতে পারবে৷ শোঁয়াপোকা বা যাকে ছেঙ্গা বলা হয় তার সাথে কি প্রজাপতির কোনো তুলনা হয়! রঙবেরঙের ডালা মেলে একটি প্রজাপতি উড়ে এসে আলতো করে হাতে বসলে এমন কেউ কি আছেন যিনি ঘেন্নায় ঝেড়ে ফেলে দেবেন? কখনো নয়৷ বরং হাত দুলিয়ে দুলিয়ে আমরা গেয়ে উঠতে পারি — ‘প্রজাপতি! প্রজাপতি! কোথায় পেলে ভাই এমন রঙিন পাখা?’
ভালো লাগার এই মূহুর্তে যদি কেউ বলে— ‘আরে এটা তো শোঁয়াপোকা!’ বিশ্বাস করবেন? তৎক্ষনাৎ একটু ভিমড়ি খেলেও ছোটো বেলায় জীবন বিজ্ঞান পড়ার কথা নিশ্চয় মনে পড়ে যাবে৷ আমরা পড়ে এসেছি শোঁয়াপোকাই রূপান্তরের মধ্য দিয়ে রঙবেরঙের প্রজাপতিতে পরিণত হয়ে ডানা মেলে উড়ে চলে৷
আমরা সাধারণত দিবাচর প্রজাপতিই দেখতে পাই৷ যারা সারাদিন ফুলে ফুলে উড়ে বেড়ায়৷ সন্ধ্যার আগে গাছের পাতায় আশ্রয় নিয়ে ডানা মুড়ে বিশ্রাম গ্রহণ করে৷ কিন্তু নিশাচর প্রজাপতিও যে আছে আমরা অনেকেই হয়তো জানি না৷ সারাদিন কোনও নির্জন অন্ধকারাচ্ছন্ন স্থানে ডানা মেলে বিশ্রাম করে৷ অন্ধকার হলে খাবার সংগ্রহে বের হয়৷ এরা সাধারণত মথ নামে পরিচিত৷ লোমশ শোঁয়াপোকা থেকে সাধারণত মথ জাতীয় প্রজাপতিই আত্মপ্রকাশ করে৷ অবশ্য লেজওয়ালা, লোমশূন্য বিচিত্র বর্ণের বড় বড় শূককীট থেকেও নিশাচর প্রজাপতি উৎপন্ন হয়ে থাকে৷ বিভিন্ন জাতীয় নিশাচর প্রজাপতির গুটি থেকেই আমরা রেশম পেয়ে থাকি৷ কোনো কোনো ক্ষেত্রে এক মাস বা দুই মাস আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রায় এক বছর নিশ্চলভাবে অবস্থান করার পর প্রজাপতির রূপ ধারণ করে গুটি কেটে বেরিয়ে আসে৷ ফলে নিকেষ কালো রাতেও মোলায়েম রঙিন পাখনায় দুলে উঠে৷ তা অনুভবের জন্য অবশ্য একটু নেচার‌্যাল লাভার হতে হবে বৈকি৷