সাধারণত সূর্যরশ্মি হল সাতটি রঙের কম্পোজিশন। এই সাত রঙ হল লাল, হলুদ, সবুজ, নীল, বেগুনী, ইন্ডিগো বা ডিপ নীল এবং কমলা। এই রঙগুলি আমাদের এনার্জি এবং শরীরে নানাভাবে প্রভাব বিস্তার করে।
লালরঙ: মানসিক জোর, রক্ত সঞ্চালন, জীবনীশক্তি এবং শরীরে এমোনিয়া কম করে এবং ভিটামিন বি-১২ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
হলুদ: স্বাধীনতা, উচ্চ আকাঙ্ক্ষা, বিজ্ঞান, আত্মবিশ্বাসে সাহায্য করা,নার্ভ চর্ম সমস্যা, হজম, লিভার, দুর্বলতা, ব্রেইন, কিডনি, মেমরি স্মৃতিশক্তি এবং ভিটামিন-এ বৃদ্ধি করে।
সবুজ: আমাদের মিষ্টি স্বভাব এবং সজীব হতে সাহায্য করে। এটা প্রাকৃতিক রঙ। এই রঙ সুখ, শান্তি এবং বিশ্রাম না পাওয়া কমায়। মানেবিশ্রাম যাতে পাওয়া যায় যে ব্যবস্হা করে। তাছাড়া বিজ্ঞানী, উকিল, ব্যবসায়ী, সেইলসম্যান এবং পিটিউটারী গ্ল্যান্ডকে কন্ট্রোল করে।
নীলরঙ: জীবনে আধ্যাত্মিকতা বয়ে আনে এবং এটা সারাজীবন রক্ষা করতে সাহায্য করে। এটা আমাদের ব্রেইনের ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। নানা কাজে সাফল্য আসে। শরীরকে বিষক্রিয়া থেকে রক্ষা করে। নানা শয়তানী কাজ, জীবাণু, ব্যথা বেদনা কম করে। এটা উচ্চশিক্ষা এবং গবেষণা করতেও সাহায্য করে।
কমলা: এটা লাল ও হলুদ রঙের মিশ্রণ। এই রঙ ডিপ্রেশন, একাকীত্ব এবং এক ঘেঁয়ে জীবন থেকে রক্ষা করে।
বেগুনীরঙ: এই রঙ আকর্ষণ, স্নেহ, মায়া, মমতা, উৎসাহ বৃদ্ধি করে। ভিটামিন-ডি বৃদ্ধি পায়।
ইন্ডিগো/গাঢ়নীল: একতা, সৎ, ভদ্রতা এবং নার্ভকে শান্ত করে। স্টমাকের উন্নতি করে। মাইগ্রেন থেকে রক্ষা করে। তাছাড়া দৃষ্টিশক্তি, কান ও নার্ভের উন্নতি ঘটায়।
সাদারঙ: সাদারঙ হল সমস্ত রঙের মিশ্রণ। এটা শান্তি, সরলতা, কোমলমানসিকতা, বন্ধুত্ব, যদি কোন ব্যক্তি মনের দুশ্চিন্তায় ভুগছে বাব্লাডপ্রেসার কিংবা বারবার রেগে যাচ্ছে, বাল্যবিধবা ও দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করে।
দেখা গেছে নানা দীর্ঘস্হায়ী অসুখ— যেমন মাইগ্রেন, এসমা, হার্ট, স্পাইনাল, চুলকানো, ব্লাডপ্রেসার, স্টমাক, কিডনি, পাইলস, আর্থ্রাইটিস ইত্যাদি রোগের ক্ষেত্রে রত্নের সাহায্যে ভাল ফল পাওয়া গেছে। শরীরের বিভিন্ন স্তর, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এবং দেহের চারিদিকের পরিবেশ খুব সূক্ষ্মভাবে এই রত্নের রঙ ও জ্যোতির রশ্মির মাধ্যমে শরীরকে আরোগ্য করে তোলে। শরীরে কোনো একটি বা একাধিক রঙের অভাবে শরীরের এনার্জি কমিয়ে দিয়ে শরীরকে অসুস্হ করে ফেলে, তখন ওই নির্দিষ্ট রঙের রত্নধারণ করে শরীরে সেই রঙের ঘাটতি কমিয়ে শরীরকে আবার সতেজ করে তোলা যায়।
গরম ও ঠান্ডারত্ন
আমাদের শরীরের এনার্জি যেখানে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে সেখানে রত্নের রঙের মাধ্যমে কম্পন তৈরি ও শক্তি উৎপন্ন করে আমাদের শরীরের সেইনির্দিষ্ট বাধাদূর করে আমাদের চেতনা শক্তিকে জাগিয়েতোলে এবং আমরা মানসিক ও শারীরিক আরোগ্যলাভ করি। দুইরকমের রঙ আছে, একটি গরম এবং অন্যটি ঠান্ডা। গরম রঙ উত্তাপ সৃষ্টি করে। যার ফল উগ্র, রাগী এবং ঠান্ডা রঙ জীবনে শান্তি নিয়ে আসে। এটা আনন্দ মনোরম ও সুখানুভূতি দেয়। চুনী, নীলা, পোখরাজ এগুলি গরমরত্ন। এই গরম রত্ন গুলি ধারণে গরম হয়। সূর্যরশ্মির মাধ্যমে উত্তাপ ও রঙ দিয়ে শক্তি উৎপন্ন হয় এবং সেই শক্তি শরীর ও আশপাশের স্হানে পজেটিভ তরঙ্গ তৈরি করে। যার ফলে রত্নধারণে শরীর, মন, ভাগ্যের উন্নতি হয়। আমাদের মনোবাসনা পূর্ণ হয়। শরীর সুস্হ হয়।
কতটুকু ওজনের রত্নধারণ করা উচিত
যেকোনও রত্ন তিন থেকে পাঁচ রতি ধারণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। মুক্তা ও প্রবালেরক্ষেত্রে ৮-১৪ রতি ওজনের পরামর্শ দেওয়া হয়। কারণ ব্যবহারের এই রত্ন গুলো ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। তবে গোমেদ ৮-১০ রতি ধারণ করা যায়। অনেক ক্ষেত্রে কুষ্ঠির ছক ও হাতেররেখা বিচারকরে জ্যোতিষগণ ওজনের তারতম্য করে থাকেন। অনেকের ধারণা নিম্নশ্রেণীর রত্নবেশি ওজনের ধারন করলে ফল পাওয়া যাবে। আসলে কথাটা ঠিক নয়। নিম্নমানেররত্ন যতই ওজনের বেশি হোকনা কেন এটা খুবকমই ফলদান করে। কারণ নিম্নশ্রেণীর রত্ন সঠিকভাবে শক্তি উৎপাদন করতে পারেনা।
কিন্তু উচ্চশ্রেণীর রত্নের ক্ষেত্রে রত্ন যদি ছোট ও হয় যথেষ্ট ফলদান করে। কারণ ভাল শ্রেণীর রত্ন শক্তি উৎপাদন করতে সক্ষম। এইজন্য জ্যোতিষীগণ অর্থেরকথা বিবেচনা করে ছোটরত্নধারণের পরামর্শদিয়ে থাকেন যাতে জাতক বা জাতিকার জীবনে শ্রীবৃদ্ধি ঘটে। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে অজগরসাপ যত বড় হোক না কেন তার কামড়ে কোনো বিষলাগেনা। কিন্তু সাপটা যদি কোবরা হয় সেটা যতই ছোট হোক না কেন, সেটা কামড়দিলে তার বিষ ক্ষতি করবেই।