শেয়ার বাজার। চাকরির চেষ্টা না করে এই বাজারে আসতে পারেন। আসুন এবং ক্ষতির সামনে পড়ুন। এই বাজারে যত ক্ষতি তত শিক্ষা। এবং তত লাভ। এই বাজারে কেউ আপনাকে শিখিয়ে দিতে আসবেন না। সামাজিক মাধ্যমে বহু লোক, বহু এজেন্ট বিনা পয়সায় শিখিয়ে দেয়ার কথা বলে টুপি পড়িয়ে চলে যাবে। এদের কাজই হল দুর্বল স্টক গছিয়ে দেয়া। তাই ক্ষতির জন্যই আসুন এই বাজারে। প্রতিটি ক্ষতি থেকে যে শিক্ষা নেবেন তা অন্য কেউ শেখাতে পারবেন না।
এই বাজারে খাতা খোলা মাত্রই অসংখ্য ছদ্মবেশি বন্ধুর দেখাও পাবেন। এরাও আপনাকে লোভ দেখাবে তাদের পছন্দের স্টক কেনার জন্য। কোন কিছুকে পাত্তা দেবেন না। নিফটিতে লগ্নি করা হলে দীর্ঘ মেয়াদী সময়ের জন্য রাখুন। রাতারাতি কোটিপতি হবার আশা করবেন না যেন। এমন জায়গায় পৌঁছাতে হলে অনেক অভিজ্ঞতা লাগবে। আর লাগবে টাকার জোর। তবে পাঁচ সাত বছর জোঁকের মতো লেগে থাকতে পারলে কিন্তু সফলতা আসবেই।
এই বাজারে অনেক রকম ট্রিডিং বা ব্যবসা আছে। কেউ সকালে কিনে বিকেলেও স্টক বিক্রি করে দেন আবার কেউ মাসে মাসে অল্প হলেও নিয়মিত টাকা খাটান ভবিষ্যতে ছেলের উচ্চশিক্ষা বা মেয়ের বিয়ের কথা ভেবে। এই বাজারে একটা কথা চালু আছে। সেটা হল শেয়ার হোক বা মানুষ, একদিন না একদিন উপরে যাবেই যাবে।
এই বাজারে লাভ কত হতে পারে তার উপর আপনার কিন্তু কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। কিন্তু ক্ষতির ক্ষেত্রে কিন্তু আপনার নিয়ন্ত্রণ থাকবে। একশ টাকার শেয়ার যদি নব্বই টাকায় নেমে যায় তখন আর ঝুঁকি না নিয়ে ছেড়ে দিলে আপনার ক্ষতি দশ টাকা। তা না করে যদি বসে থাকেন আর শেয়ারের দর আরো কমে যায় তবে গোটা লগ্নিটাই বসে যাবে।
কখন কিনবেন আর কখন তা ছেড়ে দেবেন। শেয়ার বাজারে যখন ধ্বস নামে তখন চড়চড় করে শেয়ারের দাম কমে যায়। তখন ঠিকঠাকমতো লগ্নি করা গেলে রাতারাতি না হলেও এক সপ্তাহে বা একমাসে লাখপতি হয়ে যেতে পারেন।
আবার আগের কথায় ফিরে আসি। সাহস করে চলে আসুন এখানে। বসের ছড়ি ঘোরানো নেই, সময়ে অফিস যাওয়া নেই, বদলির ভয় নেই, ছুটির প্রয়োজন নেই। অথচ অঢেল অর্থ আছে। এটা এমনই এক বাজার যেখানে লাভ করতে গেলে আগে লোকসান দিতে হয়। যত লোকসান তত শিক্ষা যা ভবিষ্যতে লক্ষ্মীকে পাকাপাকিভাবে ঘরে নিয়ে আসবে। প্রথম প্রথম লোকসান হবেই হবে। অল্প কিছু দিয়ে শুরুটা করুন। আর কারো উপদেশ না শুনে সিদ্ধান্ত নিন নিজে। এতে ভুল হলেও ভবিষ্যতের জন্য একটা শিক্ষা হবে। এই বাজারে কেউ কারো বন্ধু নয়, কোন শুভাকাঙ্ক্ষী নেই। জায়গা করে নিতে হবে একা একাই।
লেখক: শেখর পাল